উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক হিসেবে গণ্য করা হয়। সম্প্রতি বিশ্ব সাস্থ সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০২০ সালের মধ্যে স্ট্রোক ও করোনারি ধমনীর রোগ হবে বিশ্বের এক নম্বর মরণব্যাধি এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এর প্রকোপ ছড়িয়ে পর্বেই মহামারী আকারে। হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ।
উচ্চ রক্তচাপ কি ? রক্ত চলাচলের সময় রক্তনালী গাত্রে যে চাপ সৃষ্টি হয় তাকেই মূলত রক্তচাপ বলা হয়। আর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্তচাপকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে সাধারণত সিস্টোলিক চাপ ১২০ মিলি মিটার পারদের নিচে এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৪o মিলি মিটার পারদের নিচের মাত্রাকে কাংখিত মাত্রা হিসেবে ধরা হয়। আর এই রক্তচাপ যখন মাত্রাতিরিক্ত হয় তখনি আমরা তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে থাকি।
উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকির কারণ
বাবা বা মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তার সন্তানদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। এছাড়াও যারা স্নায়বিক চাপে অর্থাৎ টেনশনে বেশি ভোগেন অথবা অভ্যাস আছে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। দেহের ওজন বেড়ে গেলে কিংবা লবন এবং চর্বিযুক্ত খাদ্য বেশি খেলে এমনকি পরিবারের সদস্যদের ডায়বেটিস বা কোলেস্ট্রোরেলের পূর্ব ইতিহাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
মাথাব্যথা, বিশেষ করে
মাথার পিছনে দিকে ব্যাথা করা উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক লক্ষণ। এছাড়া রোগীর মাথা ঘোরা, ঘাড় ব্যাথা, বুক ধড়ফড় করা ও দুর্বল রোধ করাও উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ। অনেক সময় রোগীর নাক দিয়ে রক্ত পরে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীর ভালো ঘুম হয় না এবং অল্প পরিশ্রমে তারা হাপিয়ে উঠে। ভয়ের বেপার হলো, প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ হলে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তখন স্ট্রোক বা হার্ট এটাক হয়ে যায় কিছু বুঝে উঠার আগেই।
রক্তচাপ নির্ণয় করা
রক্তচাপ মাপক যন্ত্র বা বিপি যন্ত্র দিয়ে রক্তচাপ মাপা হয়। রক্তচাপ মাপার শুরুতে রোগীকে কয়েক মিনিট নিরিবিলি পরিবেশে শান্তভাবে সোজা হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ব্যাবধান রেখে রক্তচাপ নির্ণয় করা ভালো।
কর্মতৎপরতা, স্বাস্থ, বয়স এবং রোগের কারণে মানুষের রক্তচাপের মাত্রা কম-বেশি হতে পারে।উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ ঘটতে পারে, যা স্ট্রোক নামে পরিচিত।
উচ্চ রক্ত চাপ প্রতিকারের জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে, যথা:-
১. টাটকা ফল এবং শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
২. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
৩. চর্বি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. খাবারের সময় অতিরিক্ত লবন বা কাঁচা লবন (সোডিয়াম) খাওয়া উচিত নয়।
৫. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
৬. মোটা লোকদের ওজন কমাতে হবে এবং চর্বি জাতীয় খাদ্য কম খেতে হবে।
No comments:
Post a Comment