রক্তশূন্যতা
আমাদের দেশে শিশু ও নারীদের ক্ষেত্রে রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা একটি সাধারণ রোগ। রক্তশূন্যতা হচ্ছে দেহের এমন একটি অবস্থা, যখন বয়স এবং লিঙ্গভেদে রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। খাদ্যের মুখ্য উপাদান লৌহ, ফলিক এসিড, ভিটামিন বি-১২ ইত্যাদির অভাব ঘটলে এ রোগ দেখা যায়। রক্তস্বল্পতার শতাধিক কারণ জানা গেছে এবং পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি না হয়েও রক্তস্বল্পতা হতে পারে। তবে বাংলাদেশে সাধারণত লৌহের ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতা বেশি হয়। লৌহের ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতা বা রক্তশুন্যতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন :- অত্যাধিক রক্তপাত ঘটলে, কৃমির আক্রমণে, লৌহ গঠিত খাদ্য উপাদান শরীরে যথাযথভাবে শোষিত না হলে, বাড়ন্ত শিশুদের খাদ্যে লৌহের পরিমান কম থাকলে, অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটলে, কম বয়সী শিশুদের খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমান লৌহের অভাব হলে। রক্তশুন্যতা হলে যেসব লক্ষণগুলো দেখা দেয়: দুর্বলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা, মনমরা ভাব, অনিদ্রা, চোখে অন্ধকার দেখা, খাওয়ার অরুচি, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি।
এ রোগ প্রতিরোধের জন্য যা করতে হবে তা হলো :- লৌহ সমৃদ্ধ খাবার (যকৃৎ, মাংস, ডিম্, চীনাবাদাম, শাক-সবজি, বরবটি, মসুর ডাল, খেজুরের গুড়) খেতে হবে। পরীক্ষা করে অন্ত্রে কৃমির বা হুকৰ্ম এর সংক্রমণ নিশ্চিত হলে কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করা যায়। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লৌহ উপাদানযুক্ত ঔষধ সেবন করে এর রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা করা বিপদজনক হতে পারে। কেননা রক্তস্বল্পতার এমন কিছু ধরণ যেমন: থ্যালাসেমিয়া রয়েছে, যেখানে প্রচলিত মাত্রায় লৌহ জাতীয় ঔষধ বা খাদ্য গ্রহণ করলে রোগী আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পরে। তাই রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা শুরু করার আগে তার সঠিক কারণ নির্ণয় করা আবশ্যক।
No comments:
Post a Comment