ব্যবহার্য অংশ : পাতার নির্যাস।
ব্যবহার : কাশি নিরাময়ে অধিক ব্যবহৃত হয়। সমপরিমাণ আদার রস ও মধুসহ বাসক পাতার রস খেলে কার্যকরী হয়।
১. কাশি কমাতে বাসক পাতা :
আগেই যেমন বলা হল সর্দি কাশি কমাতে বাসক পাতার ব্যবহার অনস্বীকার্য। যদি বহু পুরনো সর্দি বা কাশির সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে দু-চারটি বাসক পাতা খুব ভাল করে ধুয়ে বেটে নিয়ে সেই রস যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে উপশম হয়। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে বাসক পাতা প্রচন্ড তেতো হয়। কাজেই এক চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ বাসক পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালিপেটে বেশ কয়েকদিন খেতে পারেন। এরপর অবশ্যই এক গ্লাস জল খাবেন। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই কাশি কমে যাবে।
২. যক্ষ্মা রোধে বাসক পাতা :
বাসক পাতার ঔষধি গুণ গুলির মধ্যে একটি হল বাসক পাতা যক্ষ্মা বা টিউবারকিউলোসিস রোগ সারাতে সাহায্য করে। বাসক পাতায় অ্যান্টি-মাইক্রোবাল উপাদান রয়েছে যা যক্ষ্মা কমাতে (বাসক পাতার গুনাগুন) সাহায্য করে। এছাড়াও ব্রঙ্কাইটিস ও হুপিং কাশির সমস্যা সমাধানেও বাসক পাতা সাহায্য করে।
৩. মাংসপেশিতে টান ধরলে :
অনেকসময়ে ব্যায়াম করতে গিয়ে অথবা অন্য কোনও কারণে মাংস্পেশিতে টান ধরে। সেক্ষেত্রে যদি চুন হলুদ করেও করে তার সঙ্গে বাসক পাতা বেটে মিশিয়ে বেশ কিছুক্ষন মালিশ করা যায়, তাহলে উপকার পাওয়া যায়।
৪. বাতের ব্যথায় উপশম করে :
বাসক পাতার ঔষধিগুণ গুলির মধ্যে আরও একটি হল এই পাতা বাতের ব্যথাও উপশম করতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে যা আরট্রাইটিস, বাতের ব্যথা, গাঁটে ব্যথা ইত্যাদি নিরাময় করতে সাহায্য করে। কয়েকটি বাসক পাতা বেটে তার সঙ্গে হলুদ ও চুন মিশিয়ে লাগালে বাতের ব্যথা কমে বলে অনেকে দাবী করেন।
৫. জ্বর হলে বাসক পাতা খান :
জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বাসক পাতা যথেষ্ট সাহায্য করে। এছাড়াও অনেকসময়েই জ্বরের সঙ্গে সর্দি ও কাশির সমস্যা থাকে। সেক্ষেত্রে এক চামচ মধু, এক চামচ তুলসি পাতার রস এবং এক চামচ বাসক পাতার রস খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
৬. শ্বাসকষ্টে বাসক পাতা :
বাসক পাতা কাশি, সর্দি, ব্রঙ্কাইটিস, হাপানি ইত্যাদি নিরাময় করতে সাহায্য করে। বাসক পাতার ঔষধি গুণ আমাদের শ্বাসনালী প্রশস্ত করতে (বাসক পাতার গুনাগুন) সাহায্য করে যার ফলে শ্বাসকষ্ট কমে এবং ব্রঙ্কাইটিস ও হাপানি রোগীদের উপশম পেতে সাহায্য করে। হাপানির ওষুধ তৈরি করতেও অনেকসময়ে বাসক পাতার ব্যবহার দেখা যায়।
৭. শরীরের নানা ‘দোষ কাটাতে :
আয়ুর্বেদ মতে আমাদের শরীরে নানা দোষ থাকে যার ফলে আমাদের নানারকমের শারীরিক সমস্যা ও অসুখ হয়। আয়ুর্বেদ অনুসারে, শরীরের সুস্থ থাকা নির্ভর করে বায়ু, পিত্ত এবং কফ, এই তিনটি বিষয়ের ভারসাম্যের উপর। এর কোনওটার মাত্রা যদি বেড়ে যায়, তা হলেই দেখা দেয় নানা সমস্যা। তবে বাসক পাতার নিয়মিত সেবনে আমাদের শরীরে এই তিনটি বস্তুর ভারসাম্য বজায় থাকে এবং শরীর সুস্থ থাকে।
৮. রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে :
অনেকেরই মুখে ব্রণ হয় বা পেটে সমস্যা হয় অথবা নানারকম অ্যালারজির সমস্যা থাকে। এই সমস্যাগুলো বেশিরভাগ সময়েই তখন হয় যখন রক্ত পরিষ্কার থাকে না। বাসক পাতার নিয়মিত সেবনে কিন্তু আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার হয়। শুধু তাই নয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে।
No comments:
Post a Comment